ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
শিক্ষাণবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স হলো ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম ধাপ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন অধিদপ্তর (বিআরটিএ) থেকে ফরম সংগ্রহ করে তাতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে লার্নার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স লার্ণারের জন্য আবেদন
বিআরটিএ’র ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ফরম ফিলাপ করুন- bsp.brta.gov.bd
লগিন রেজিস্ট্রেশন করে অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করুন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স লার্ণারের আবেদনে যা যা প্রয়োজন-
*রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কতৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট
*এনআইডি কার্ড/জন্মনিবন্ধণ/পাসপোর্টের ফটোকপি (সত্যায়িত)
*সদ্য তোলা ছবি
* অনলাইনে ফি জমা দিন
এই পক্রিয়া সম্পন্ন হবার পর আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স লার্ণার পেয়ে যাবেন।
দুই থেকে তিন মাস প্রশিক্ষণের পর নির্ধারিত তারিখ, সময় এবং স্থানে লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক (ফিল্ড টেস্ট) পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পুনরায় আরেকটি ফরমে নিম্নলিখিত কাগজপত্র ও ফী সার্কেল অফিসে প্রদান করে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করতে হবে।
*রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট
*এনআইডি/জন্ম নিবন্ধন /পাসপোর্টের ফটোকপি (সত্যায়িত)
*নির্ধারিত ফি নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানে রশিদ(পেশাদার ১৬৭৯ টাকা এবং অপেশাদার ২৫৪২ টাকা)
*পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন (শুধুমাত্র পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য
*সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি (১ কপি)
উপরোক্ত আবেদন অনলাইন bsp.brta.gov.bd পোর্টালেও করতে পারবেন পূর্বের বর্ণীত নিয়মে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রকৃতি
পেশাদার হালকা: (মোটরযানের ওজন ২৫০০কেজি-এর নিচে) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে।
পেশাদার মধ্যম: (মোটরযানের ওজন ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৩ বছর হতে হবে এবং পেশাদার হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।
পেশাদার ভারী: (মোটরযানের ওজন ৬৫০০ কেজির বেশি) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৬ বছর হতে হবে এবং পেশাদার মধ্যম ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।
শিক্ষানবিশ হয়ে পরীক্ষা দিয়েই মিলবে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
বি:দ্র: পেশাদার ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রার্থীকে প্রথমে হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে। ন্যুনতম তিন বছর পর তিনি পেশাদার মিডিয়াম ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং মিডিয়াম ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার কমপক্ষে ০৩ বছর পর ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেলে আপনি নিশ্চিন্তে রাস্তায় বেরিয়ে যেতেই পারেন, থাকবে না মামলা জরিমানা ভোগান্তির ভয়, তবে লাইসেন্স আজীবনের জন্য নয়৷ নির্দিষ্ট সময় পরপর এটি নবায়ন করতে হয়। সাধারণত অপেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ দশ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ পাঁচ বছর প্রদান করা হয়ে থাকে৷
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া
অপেশাদার গ্রাহককে প্রথমে নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২৪২৭/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২৩০/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেলে একইদিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ করা হয়। স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
পেশাদার পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদেরকে পুনরায় একটি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় উত্ত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ১৫৬৫/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২৩০/- টাকা জরিমানাসহ ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়। স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
পেশাদার পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদেরকে পুনরায় একটি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় উত্ত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ১৫৬৫/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২৩০/- টাকা জরিমানাসহ ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়। স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩। এনআইডি কার্ড / জন্ম নিবন্ধন /পাসপোর্টের ফটোকপি (সত্যায়িত)
৪। নির্ধারিত ফী জমাদানের রশিদ (বিআরটিএ নির্ধারিত ব্যাংকে) বা অনলাইন www.ipaybrta.cnsbd.com এর মাধ্যমে।
৫। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৬। সদ্য তোলা পাসপোর্ট (১ কপি) ও স্ট্যাম্প (১ কপি) সাইজ ছবি।
ড্রাইভিং লাইসেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ন্যাশনাল আইডি কার্ড কিংবা পাসপোর্টের মতই, কিছু ক্ষেত্রে তারচেয়েও বেশি। তাই লাইসেন্স যত্নে রাখা জরুরী৷ তারপরও দূর্ঘটনাবশত লাইসেন্স হারিয়ে গেলে কিংবা নষ্ট হলে ডুপ্লিকেট লাইসেন্স বিআরটিএ এর সার্কেল অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
ডুপ্লিকেট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
সেক্ষেত্রে প্রথমেই থানায় গিয়ে লাইসেন্স হারিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত জিডি করতে হবে এবং ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করে বিআরটিএ অফিস থেকে নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহ আবেদন করতে হবে।
লাইসেন্স হারানোর দ্রুততম সময়ের মধ্যে থানায় জিডি করুন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। জিডি কপি ও ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স।
৩। নির্ধারিত ফী (হাই সিকিউরিউটি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ৮৭৫/-টাকা) বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ
৪। সদ্য তোলা পাসপোর্ট (১ কপি) সাইজ ছবি
ড্রাইভিং লাইসেন্স শুধু যানবাহন চালনার ক্ষেত্রেই নয়, অনেকক্ষেত্রে পরিচয় পত্র হিসেবেও কাজ করে, তাই লাইসেন্সে প্রদান করা সকল তথ্য যাতে সঠিক থাকে, সেদিকেও লক্ষ রাখা উচিৎ।