Death Certificate - মৃত্যু নিবন্ধন

0
Death Certificate - মৃত্যু নিবন্ধন

আজকে আমরা জানতে চলেছি মৃত ব্যক্তির মৃত্যু নিবন্ধন সনদ পেতে অনলাইনে কিভাবে আবেদন করতে হয়, আবেদন ফরম পূরণ করা ও মৃত্যু সনদ অনলাইন করার নিয়ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে।

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন এর মত মৃত্যু নিবন্ধন সনদ অনলাইন ভিত্তিক হয়ায় যে কেউ মৃত্যু সনদ আবেদন ফরম অরিজিনাল কিনা সেটি অনলাইনে মৃত্যু সনদ যাচাই  করার মাধ্যমে সত্যায়িত করতে পারবে। মৃত্যু নিবন্ধন সনদ জন্ম নিবন্ধন  সনদের মতই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট।

অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম | Death Registration Online

Death Cerificate Application form- মৃত্যু নিবন্ধন
Death Cerificate Application form

নতুন মৃত্যু নিবন্ধন করতে কি কি লাগে

অনলাইনে মৃত্যু সনদ আবেদন করার জন্য মৃত ব্যক্তির অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন অনলাইন হতে পারে হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন করা সম্ভব নয়। মৃত্যু নিবন্ধন অনলাইন ফরম এর মাধ্যমে করার জন্য যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা নিচে দেওয়া হলঃ-

1.অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ

2.মৃত্যুর তারিখ ও স্থান সম্পর্কিত প্রমাণপত্র

হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করার ক্ষেত্রে ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীর প্রত্যয়নপত্র মৃত্যুর প্রমাণপত্র হিসেবে গৃহীত হয়। আর যদি সাধারণভাবে বাসাবাড়িতে মৃত্যুবরণ করে সে ক্ষেত্রে নিচে উল্লিখিত ডকুমেন্টের যেকোনোটি প্রযোজ্য হবে।

জানাযা সম্পাদনকারী ইমাম কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র

সৎকার সম্পূর্ণ কারি কর্তৃক প্রত্যয়ন

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি কর্তৃক মৃত্যুবরণ

সমাধি বা সৎকারস্থলের কেয়ারটেকার কর্তৃক প্রদত্ত দাফন বা সৎকার রসিদের অনুলিপি

3.মৃত্যু স্থান এর ঠিকানা

4.মৃত ব্যক্তির বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা

5.মৃত্যু নিবন্ধন সনদ আবেদিকারীর আইডি কার্ড / জন্ম নিবন্ধন

6.মৃত্যুর তথ্য প্রদানকারীর ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র / জন্ম নিবন্ধন

অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম - Death Certificate

অনলাইনে নতুন মৃত্যু নিবন্ধন সনদের জন্য  আবেদন করতে ভিজিট করুন bdris.gov.bd/dr/application এবং জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে অনুসন্ধান করে নিবন্ধকের কার্যালয় বাছাই করুন। তারপর মৃত্যুর কারণ, মৃত্যু স্থানের ঠিকানা, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা এবং তথ্য প্রদানকারীর তথ্য দিয়ে আবেদন করুন।

মৃত্যু নিবন্ধন অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার জন্য চেয়ারম্যান কার্যালয় তথা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কিংবা সিটি কর্পোরেশন অথবা ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় আবেদন করতে হবে। অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন করা হলেও মৃত্যু সনদ গ্রহণ করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল সেবা সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে।

নতুন মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন করার প্রক্রিয়াটি নিচে কয়েকটি ধাপে দেখানো হলো। প্রতিটি ধাপ মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন করলে নিজে নিজে অনলাইনের মাধ্যমে মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন ও মৃত্যু সনদ ডাউনলোড করতে সক্ষম হবেন।

Step1.জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান

আবেদন করার প্রথম ধাপেই মৃত ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্মতারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করতে হবে। ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন অনলাইন হয়ে থাকলে অনুসন্ধান করার সাথে সাথে ব্যক্তি সম্পর্কিত কিছু তথ্য নিচের ছবির প্রদর্শিত হবে। তথ্য ঠিক থাকলে নির্বাচন করুন বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপের দিকে অগ্রসর হতে হবে।

Step2.মৃত্যু সনদ সংগ্রহ করার কার্যালয় নির্বাচন

নিবন্ধন কার্যালয় বাছাই করার ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি যে ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার বাসিন্দা সেই ঠিকানা বাছাই করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা এলাকা হলে কাউন্সিলর কার্যালয় ইউনিয়ন হলে ইউনিয়ন পরিষদ মৃত্যু সনদ সংগ্রহ করার ঠিকানা কিভাবে করতে হবে।

Step3.মৃত্যুর বিবরণ (তারিখ ও কারণ)

এই ধাপে আপনাকে মৃত্যুর তারিখ এবং মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করতে হবে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে অনেকগুলো কারণ দেয়া রয়েছে সেখান থেকে মৃত ব্যক্তির সাথে যে কারনটি প্রযোজ্য যায় সেটি বাছাই করতে হবে।

এর বাহিরে অপশনাল তথ্য হিসেবে স্বামী অথবা স্ত্রীর জন্ম নিবন্ধন নাম্বার জাতীয় পরিচয় পত্র যুক্ত করা যেতে পারে। স্বামী অথবা স্ত্রীর নাম বাংলা এবং ইংরেজিতে যুক্ত করার অপশন রয়েছে তবে সকল তথ্য অপশনাল না দিলেও চলবে।

Step3.মৃত্যু স্থান ও মৃত্যুর সময় বসবাসের ঠিকানা

মৃত ব্যক্তি যে স্থানে মৃত্যুবরণ করেছিল সেই স্থানের বিবরণ দিতে হবে। মৃত্যুর স্থানের বিবরণ হিসেবে বিভাগ,জেলা, উপজেলা ইউনিয়ন,গ্রামের নাম ও বাসা নাম্বারের তথ্য দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হয়।

মৃত্যুর সময় বসবাসের ঠিকানা স্থলে মৃত ব্যক্তি যদি নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করে সেক্ষেত্রে দুটি ঠিকানায় একই হবে। সেক্ষেত্রে পুনরায় মৃত্যুর সময় পাশের বাসার ঠিকানা পূরণ না করে মৃত্যুর স্থানের ঠিকানা ও মৃত্যুর সময় বসে বসে ঠিকানায় কি একটি চেকবক্স থাকবে সেটি বাছাই করে দিতে হবে। আর যদি ঠিকানা বিনয় তাহলে ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানা দিয়ে ফরমটি ফিলাপ করে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে হবে।

Step4.আবেদনকারী ও তথ্য প্রদানকারী তথ্য

মৃত্যু নিবন্ধন এর জন্য যে ব্যক্তি আবেদন করছে তার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর অথবা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার প্রয়োজন হবে। জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সেটি অনলাইন হতে হবে। এর সাথে একটি সচল মোবাইল নাম্বার এবং অপশনাল হিসেবে ইমেইল এড্রেস যুক্ত করতে পারবে।

আবেদনকারীর ঠিকানা এই ঘরগুলোতে যে ব্যক্তি আবেদন করছে তার চাহিত ঠিকানা বাছাই করতে হবে। এক্ষেত্রে ঠিক আগের মত বিভাগ, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, গ্রামের নাম ইত্যাদি তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।

এরপর আবেদনকারীর সাথে মৃত ব্যক্তির সম্পর্ক সিলেক্ট করতে হবে। এ ধাপে শেষের দিকে আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন নাম্বার পুনরায় পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।

Step5.সম্পূর্ণ আবেদনে তথ্য নিশ্চিত

এতক্ষন যাবৎ মৃত্যু সনদ অনলাইন আবেদন করার যেসকল ধাপগুলো অতিক্রম করা হয়েছে সবগুলো ধাপের তথ্য সঠিক আছে কিনা সেটা যাচাই করার পালা। সম্পন্ন আবেদনের একটি বিবরণী সংক্ষেপে দেখানো হবে।

সবকিছু ঠিক থাকলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে আবেদনটি সম্পন্ন করতে হবে। আর যদি কোথাও কোনো রকম ভুল পরিলক্ষিত হয় তাহলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে কাংখিত তথ্য পুনরায় সংশোধন করতে হবে।

Step6.অ্যাপ্লিকেশন আইডি সংগ্রহ ও মৃত্যু সনদ ডাউনলোড

মৃত্যু নিবন্ধন ফরম সাবমিট করার পর নিচের ছবির মত একটি অ্যাপ্লিকেশন আইডি  দেখতে পাবেন। মৃত্যু নিবন্ধন অ্যাপ্লিকেশন আইডি সংগ্রহ করে রাখতে পারেন অথবা এই পেজটি প্রিন্ট করে নিতে পারেন।

মৃত্যু সনদ হাতে পেতে বা ডাউনলোড করতে অ্যাপ্লিকেশন আইডি এবং মৃত্যু সনদ পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন সেগুলো সাথে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ বা নিবন্ধকের কার্যালয় যোগাযোগ করতে হবে।

মৃত্যু সনদ ফি কত

মৃত ব্যক্তির মৃত্যু ৪৫ দিনের মধ্যে অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধন করলে বিনামূল্যে মৃত্যু সনদ সংগ্রহ করার যাবে। তবে মৃত্যুর ৪৫ দিনের বেশি এবং ৫ বছরের কম এই সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করলে সনদ পেতে ২৫ টাকা সরকারি ফি প্রদান করতে হয়। ৫ বছরের বেশির ক্ষেত্রে মৃত্যু সনদ গ্রহণ করতে ৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হয়।

প্রশ্ন: মৃত্যু নিবন্ধন কি?

উত্তর: মৃত্যু নিবন্ধন হলো মৃত ব্যক্তির নাম, মৃত্যুর তারিখ, মৃত্যুর স্থান, লিঙ্গ, পিতা বা মাতা বা স্বামী অথবা স্ত্রীর নাম নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক খাতায়/রেজিস্টারে লেখা এবং মৃত্যু সনদ প্রদান করা।

প্রশ্ন: মৃত্যু নিবন্ধন কি কি কাজে লাগে?

উত্তর: মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন, পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তি প্রভৃতি কাজের জন্য মৃত্যু নিবন্ধন প্রয়োজন। তদুপরি মৃত্যু নিবন্ধিত না হলে দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হবে না। মৃত্যু নিবন্ধন করতে হলে মৃত ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে। জন্ম নিবন্ধন করা না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সম্পাদনের পর মৃত্যু নিবন্ধন করতে হবে।

প্রশ্ন: মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন প্রক্রিয়া ?

উত্তর: মৃত্যু নিবন্ধনের নির্ধারিত আবেদন ফরমে (ছাপানো বা হাতে লিখা হলেও চলবে) নিবন্ধকের নিকট নিম্নে বর্ণিত দলিল বা প্রত্যয়নসহ আবেদন করতে হবে।আবেদন ফরমের যথাস্থানে নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক প্রত্যয়ন বা দলিল সংযুক্ত থাকতে হবে:

সরকারী বা বেসরকারী স্বাস্থ্যকর্মীর প্রত্যয়ন, অথবা

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বা চিকিৎসক কর্তৃক প্রদত্ত মৃত্যুসংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র, অথবা

মৃত ব্যক্তির ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা

সংশ্লিষ্ট কবরস্থান বা শ্মশানের কেয়ারটেকার কর্তৃক প্রদত্ত দাফন বা সৎকার রসিদের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা

ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট সদস্য অথবা পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত মৃত্যুসংক্রান্ত প্রত্যয়ন, অথবা

নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন মৃত্যুসংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি।

প্রশ্ন: মৃত্যু তথ্য প্রদানকারী কারা?

উত্তর: মৃত ব্যক্তির পুত্র বা কন্যা বা অভিভাবক মৃত্যুর ৩০ দিনের মধ্যে মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের নিকট প্রদানের জন্য দায়ী থাকবেন।

এছাড়া নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ কোন ব্যক্তির মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করতে পারবেন:

ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, এবং সচিব;

গ্রাম পুলিশ;

সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কাউন্সিলর;

ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অথবা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবার কল্যাণকর্মী;

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেক্টরে নিয়োজিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) মাঠকর্মী;

কোন সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা মাতৃসদন বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে উহার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার অথবা ডাক্তার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;

কোন গোরস্থান বা শ্মশান ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক;

নিবন্ধক কর্তৃক নিয়োজিত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী;

জেলখানায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে জেল সুপার বা জেলার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি;

সাধারণ স্থানে (Public Place) পড়ে থাকা পরিচয়হীন মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা; এবং

নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)