ট্রেড লাইসেন্স এর সূচনা: বাংলাদেশে ট্রেড লাইসেন্স এর সূচনা ঘটে ২০০৯ সালে সিটি কর্পোরেশন [কর] বিধি, ২০০৯ এর মাধ্যমে । এই লাইসেন্স ব্যবসা উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। সিটি কর্পোরেশন বা সিটি পরিষদ এই লাইসেন্সটির প্রক্রিয়া পরিচালনা করে ।
লাইসেন্স এর ব্যবহার
শুধুমাত্র ব্যবসার ক্ষেত্রে এই লাইসেন্স ব্যবহার করবেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, লাইসেন্সধারী ব্যক্তির নামে এই লাইসেন্স অফিস কর্তৃক প্রদান করা হয় এবং এটা কোনোভাবে হস্তান্তর করা যায় না। এই ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায় না। ছোট বড় সকল ব্যবসার জন্য এই লাইসেন্স একটি আইনি সত্তা হিসাবে কাজ করে।
ট্রেড লাইসেন্স কি?
ব্যবসার আইনগত দলিল হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স অর্থাৎ ব্যবসার জন্য রাষ্টীয় অনুমোতি পত্র হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স। আপনি ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াও ব্যবসার করতে পারবেন। তবে এটি আইনগতভাবে বৈধ নয় এবং ব্যবসার জন্য আপনি কোন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। সামাজিকভাবে ব্যবসার জন্য সকল সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। আর এটি হচ্ছে আপনার ব্যবসার সতন্ত্র সত্তা। ফলে ব্যবসার নামে ব্যাংক হিসাব ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।
ই-ট্রেড লাইসেন্স কি?
ই-ট্রেড লাইসেন্স হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স করার অনলাইন অ্যাপ। ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য যে ট্রেড লাইসেন্স করা হয় তাকে ই-ট্রেড লাইসেন্স বলে।
ই ট্রেড লাইসেন্স এর বড় সুবিধা হচ্ছে, কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই নিজে নিজেই অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে ঘরে বসেই ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যায়। অফিসে না গিয়ে নবায়নও করে নেওয়া যায় সহজেই।
কিভাবে ই-ট্রেড লাইসেন্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করবেন এবং ট্রেড লাইসেন্স হাতে পাবেন তা জানার আগে ট্রেড লাইসেন্স সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম ও নবায়ন ফি
যে অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হবে সেই অফিসেই নবায়ন করতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স আঞ্চলিক কর (সিটি কর্পোরেশন, সিটি পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ) অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদান কিংবা পরিচালনা করে থাকেন।
ট্রেড লাইসেন্সে এর জন্য নির্ধারিত ফি লাইসেন্স ফরমে উল্লেখিত যে কোনো ব্যাংক শাখা কিংবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।
ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে
১। ভাড়ার চুক্তিপত্র
২। হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের কপি
৩। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্রেড লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে
উপরোক্ত সবগুলি ডকুমেন্ট এবং এর সাথে নিচের নথিপত্র লাগবে-
১। পরিবেশ সংক্রান্ত অনাপত্তি পত্র
২। প্রতিষ্ঠানের অবস্থান চিহ্নিত মানচিত্র
৩। অগ্নিনির্বাপণ প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র
৪। ডি.সি.সি. র নিয়ম মানার অঙ্গতীকারপত্র অর্থাৎ এর নিয়মাবলি মেনে চলা হবে এমতে ১৫০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারপত্র দাখিল করতে হবে
৫। ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
ক্লিনিক অথবা ব্যক্তিগত হাসপাতালের ক্ষেত্রে
উপরোক্ত সবগুলি ডকুমেন্ট এবং এর সাথে নিচের নথিপত্র লাগবে-
১। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন লাগবে
লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে
১। মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল
২। সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন
ছাপাখানা ও আবাসিক হোটেল লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে
১। ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি লাগবে
রিক্রটিং এজেন্সি লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে
১। মানবসম্পদ রপ্তানি ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স
অস্ত্র ও গোলাবারুদের ক্ষেত্রে
১। অস্ত্রের লাইসেন্স
ঔষধ ও মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে
১। ড্রাগ লাইসেন্সের কপি
ট্রাভেলিং এজেন্সির ক্ষেত্রে
১। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পত্র জমা দিতে হবে
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
১। পুরাতন ট্রেড লাইসেন্সটি অর্থাৎ যেটার মেয়াদ শেষ সেটি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করিবেন।
২। দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কর বিষয়ক কর্মকর্তা নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করবেন।
৩। লাইসেন্স নবায়ন ফি নতুন লাইসেন্স ফির সমপরিমাণ ফি দিতে হবে। এই ফি লাইসেন্স ইস্যু করার মতোই লাইসেন্স ফরমে উল্লিখিত ব্যাংকে কিংবা অনলাইনে প্রদান করবেন।